বাংলাদেশ লিকুইফাইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) অপারেটররা লাইসেন্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ওয়ান স্টপ সার্ভিসের অন্তুর্ভুক্ত হতে চলেছেন। এর ফলে এলপিজি অপারেটরদের এখন থেকে আর লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য ২০টি প্রতিষ্ঠানে দৌঁড়াতে হবে না। এর ফলে তাদের পরিচলানা খরচও কমে যাবে।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সূত্র মতে, এলপিজি সেক্টরের প্রসার ও নৈতিকতা বজায় রাখতে খুব দ্রুতই অপারেটরদের জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস বা এক জায়গায় সব সেবার ব্যবস্থা করা হবে।
জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমান বলেন ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) মতো ওয়ান স্টপ সার্ভিস ব্যবস্থার মাধ্যমে সকল সুবিধা এক ছাতার নিচে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি।’
আগামী ছয় মাসের মধ্যেই এই ব্যবস্থা চালু করা হবে বলে জানান তিনি।
বর্তমানে এলপিজি অপারেটরদের বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সহ বেশ কয়েকটি প্রশাসনিক এবং লাইসেন্সিং প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়।
এ ব্যাপারে বসুন্ধরা এলপিজির বিপণন প্রধান জাকারিয়া জালাল বলেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে এলপিজি অপারেটরদের জেলা হতে মন্ত্রণালয় পর্যন্ত প্রায় ২১টি প্রতিষ্ঠানের দ্বারস্থ হতে হয়।
এই শিল্পের সাথে জড়িত এবং ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরা বলছেন, জ্বালানিক্ষেত্রে বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা থাকার কারণে ব্যবসায়ী ও ভোক্ত পর্যায়ে দিন-দিন দাম বেড়েই চলেছে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিবছর এসকল নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে দেয়া ফি এর অতিরিক্ত খরচের সবশেষে ভোক্তার ওপরই চাঁপানো হচ্ছে।
বাংলাদেশ এলপিজি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আজম জে চৌধুরী এক সেমিনারে বলেন, উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতিবছর সরাকরি ও বেসরকারি ১৩টি সংস্থাকে লাইসেন্স নবায়ন ও বহাল রাখার জন্য ১ কোটি ৩৫ লাখ টাক ফি প্রদান করতে হয়।
আরও পড়ুন: প্রথমবার এলপিজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করল সরকার
সম্প্রতি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের এক শুনানিতে, ছয়টি বৃহৎ এলপিজি কোম্পানি একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাস্তবায়নের দাবি জানায়।
বাংলাদেশ সিএনজি ফিলিং স্টেশন এবং কনভার্শন মালিক সমিতির সদস্য হাসিন পার্ভেজও অন্তত ২২টি প্রতিষ্ঠানে ফি জমা দিয়ে লাইসেন্স গ্রহণ এবং হয়রানির বিষয়টি তুলে ধরেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘এই ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় বিড়ম্বনা হল, এখানে লাইসেন্সিং ব্যবস্থার কোনও নির্দিষ্ট ধারাবাহিকতা নেই। এর দপ্তর থেকে অন্য দপ্তরে পাঠানো হয় লাইসেন্স পাওয়ার জন্য।’
একই অভিযোগের কথা উল্লেখ করে, বাংলাদেশ ভোক্তা সমিতির উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, ‘আমরাও জ্বালানি খাতে একটি মাত্র নিয়ন্ত্রক সংস্থা চাই। নিয়ন্ত্রক সংস্থার আধিক্যের কারণে যেমন ব্যবসায়িকর খরচ বৃদ্ধি পায়, তেমনি ভোক্তাকে অধিক মূল্য পরিশোধ করতে হয়।’
বিইআরসি’র সাবেক সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, জ্বালানি খাতে শুধু একটি এবং প্রধান নিয়ন্ত্রক সংস্থা থাকা উচিত। এই নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি সরকারের অন্যান্য সংস্থাগুলো সাথে সমন্বয়ের ব্যবস্থা করবে।